পবায় পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানে তুলকালাম কান্ড
রাজশাহীর পবায় মাদক বিরোধী অভিযানে তুলকালাম কান্ড ঘটেছে। উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের গহামাবোনা গ্রামে এ অভিযানের সময় পুলিশের উপর হামলা চালায় মাদক ব্যবসায়ীরা। পরে পুলিশ দুই মাদক ব্যবসায়ী রুবেল হোসেন ও রতন আলীর বাড়িতে তল্লাশীর সময় আসবাবপত্র তছনছ এবং ভাংচুর করে। পরে পুলিশ ১০ মাসের শিশু সন্তানসহ রুবেলের স্ত্রীকে ধরে নিয়ে যায়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ৭টার দিকে গহামাবোনা গ্রামে পবা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাসমত আলীর নেতৃত্বে মাদক বিরোধী অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানের সময় সোর্সকে সঙ্গে নিয়ে এক কনস্টেবল ২৫ বোতল ফেনসিডিলসহ রুবেল ও রতনকে ধরে ফেলে। এসময় রুবেল ও রতন হামলা চালিয়ে তাদের পিটিয়ে জখম করে। রুবেলের বাড়ি সামনে এ হামলায় লাঠির আঘাতে মাথা ফেটে রক্তাক্ত হয় জনৈক পুলিশের সোর্স। আর সামান্য আহত হন ওই কনস্টেবল।
এর পর পরই সেখানে ৭/৮ জনের পুলিশের টিম পৌঁছালে রুবেল ও রতন পালিয়ে যায়। পরে আহত দুইজনকে উদ্ধার করে পুলিশ তাদের চিকিৎসার জন্য পাঠায়। সেখান থেকে পুলিশ ২৫ বোতল ফেনসিডিল ও রতনের মোটরসাইকলে জব্দ করে। এর পর পুলিশ তাদের বাড়িতে তল্লাশী চালিয়ে বেশ কিছু ভারতীয় অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করে।
তবে রুবেলের দাবি, একটি মোটরসাইকেলে গিয়ে তার বাড়ির সামনে ফেনসিডিলের বোতল ছিটিয়ে দেয়া হয়। এসময় তারা প্রতিবাদ করলে তাদের আটক করার চেষ্টা করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এর পর পরই কয়েকজন পুলিশ সেখানে উপস্থিত হলে তারা পালিয়ে যান।
রুবেল আরও বলেন, সাদা পোষাকে পুলিশ তাদের বাড়িতে তল্লাশীর নাম আসবাবপত্র তছনছ, ভাংচুর ও লুটপাট করে। পুলিশ তার বাড়ি থেকে একটি টিভি, স্বর্ণের মালা, একটি টেপ রেকডার, মাছ মারা নতুন জাল ও নগদ ২৫ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। এ সময় পুলিশ তার ১০ মাসের শিশু সন্তানসহ তার স্ত্রী আয়শা বেগমকে ধরে নিয়ে যায়। এছাড়াও রতনের একটি মোটরসাইকেল ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায় বলে দাবি করেন রুবেল।
ঘটনার পর তিনি সেখানে গিয়ে স্থানীয়দের কাছে বিষয়টি শুনেছেন বলে জানিয়ে হরিপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে সদস্য আকবর আলী বলেন, রুবেল ও রতন দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। অভিযানের সময় তারা পুলিশের উপর প্রথমে হামলা চালায়। এর পর পুলিশ তাদের বাড়িতে তল্লাশী করে এবং আসবাবপত্র তছনছ করে।
পবা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাসমত আলী বলেন, ‘রুবেল ও রতন মোটরসাইকেলে ফেনসিডিল নিয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছেন এমন তথ্য তাদের কাছে ছিল। এ তথ্যের ভিত্তিতে সোর্সকে সঙ্গে নিয়ে একজন কনস্টেবল তাদের বাড়ির পাশে অবস্থান নেয়। আর আমি টিম নিয়ে কিছুটা দুরে অপেক্ষা করছিলাম। রুবেল ও রতন ফেনসিডিল নিয়ে বাড়ির সামনে আসা মাত্রই তাদের ধরে ফেলে। এসময় তারা হামলা চালায়।
পুলিশ পরিদর্শক হাসমত বলেন, রুবেলের প্রতিবেশী সমশের আলীর উপস্থিতিতে তাদের বাড়িতে তল্লাশী করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাতেই রুবেল, রতন ও রুবেলের স্ত্রী আয়শা বেগমের নামে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় রুবেলের স্ত্রীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।