আজ রাণীনগর হানাদার মুক্ত দিবস
রাাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের চুড়ান্ত বিজয়ের দিন ১৬ ডিসেম্বরের বাকী আর ৬ দিন। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর রাণীনগর বাসীর জন্য একটি স্মরনীয় দিন। আজকের এই দিনে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা ৩৭ ঘন্টা সম্মুখ যুদ্ধের মাধ্যমে হানাদার মুক্ত হয়। স্বাধীনতার সংগ্রামে সাড়া দিয়ে সারা দেশের ন্যায় এই উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা মাতৃভূমিকে শত্রু মুক্ত করার লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের ৯ মাস রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের পর নওগাঁর রাণীনগর উপজেলাবাসী আজকের এ দিনে শত্রুমুক্ত হয়ে বিজয় উল্লাস আর “জয় বাংলা, বাংলার জয়” জয়ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে তুলেছিল রাণীনগর উপজেলার আকাশ-বাতাস। এ এলাকা পাক হানাদার মুক্ত করতে অসংখ্য জীবন বলিদান এবং কত অসহায় মা বোনের ইজ্জত লুন্ঠন করেছিল সেই ভয়াবহ দিনে তার সঠিক পরিসংখ্যান কেউ জানে না। এছাড়াও পঙ্গুত্বের অভিশাপ আর মা-বাবা, স্বামী, স্ত্রী, ভাই, বোন হারানো অসহ্য যন্ত্রনা নিয়ে এখনও অনেক নারী-পুরুষ বেঁচে আছে। স্বাধীনতার এত বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ তাদের খোজ-খবর রাখেনি। ১৯৭১ সালের ৯ই ডিসেম্বর রাণীনগর পাক-হানাদার মুক্ত করার লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধারা থানা সদরে থাকা হানাদার ক্যাম্প চারিদিক থেকে ঘেরাও করেন।
পরদিন ১০ই ডিসেম্বর দীর্ঘ ৩৭ ঘন্টা সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ন হয়ে শেষের দিকে ভোরে উভয় পক্ষের গোলাগুলির এক পর্যায়ে ১৭ জন রাজাকার অস্ত্রসহ আত্মসমর্পন করে। এই সময় পাক-বাহিনী সান্তাহার অভিমুখে পালিয়ে যায়। বীরমুক্তিযোদ্ধা আকতারুজ্জামান রনজু ও মো: হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে এই সম্মুখ যুদ্ধে স্থানীয়দের মধ্যে অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ দুলু, আব্দুর রাজ্জাক, ইসমাইল হোসেন, নুরুল ইসলাম, শহিদুল্লাহ মিঞা, চয়েন সরকার এবং জেলা পর্যায়ের মুক্তিযোদ্ধা ওহিদুর রহমান, আফজাল হোসেনসহ নাম না জানা আরও অনেক মুক্তিযোদ্ধারা। এই সম্মুখ যুদ্ধে রাণীনগর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লুৎফর রহমান পাক-হানাদার বাহিনীর গুলিতে শহীদ হন। সেই সাথে বিরোচিত লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে রাণীনগরকে হানাদার মুক্ত করেন স্বাধীনতা যুদ্ধের সেই মুক্তিযোদ্ধা নায়ক সেনারা।