প্রশ্নপত্রে উসকানি: রাবির চারুকলা ডিনের পদত্যাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানি থাকার অভিযোগে পরীক্ষা কার্যক্রমে নিষিদ্ধ হওয়া চারুকলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান অব্যাহতি চেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বরাবর তিনি এ অব্যাহতিপত্র জমা দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারী।
অধ্যাপক এম এ বারী জানান, ব্যক্তিগত সমস্যা দেখিয়ে অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান অব্যাহতিপত্র জমা দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অনুমোদন না দেওয়া পর্যন্ত তিনি ওই পদে দায়িত্ব পালন।
এটা অব্যাহতিপত্র না পদত্যাগপত্র, সে বিষয়ে জানতে চাইলে এম এ বারী বলেন, তিনি অব্যাহতিপত্র দিয়েছেন, পদত্যাগপত্র নয়। তবে রোববার কয়টার দিকে এই অব্যাহতি পত্র দিয়েছে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি রেজিস্ট্রার।
এর আগে ৬ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭৪তম সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চারুকলা অনুষদের প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ধর্মীয় গ্রন্থ বিষয়ে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক প্রশ্ন প্রণয়নের অভিযোগে অনুষদটির ডীন অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ও চারুকলার সহকারী অধ্যাপক জিল্লুর রহমান ১০ বছরের জন্য যেকোন পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন।
ডীনের পদ থেকে অব্যাহতির জন্য যদি আইনগত বাধা না থাকে তাহলে ডীনকে অব্যাহতি দেওয়া হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয় ওই সভায়। সিদ্ধান্তের চার দিন পর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে অব্যাহতিপত্র দিলেন অধ্যপক মোস্তাফিজুর রহমান।
গত ২৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত চারুকলা অনুষদের ‘আই’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার দুই নম্বর সেটের ৭৬ নম্বর প্রশ্নটি ছিল- ‘বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি? উত্তরের জন্য দেওয়া চারটি অপশন ছিল- (ক) পবিত্র কুরআন শরীফ (খ) পবিত্র বাইবেল (গ) পবিত্র ইঞ্জিল (ঘ) গীতা। গীতার আগে ‘পবিত্র’ ছিল না।
একই সেটের ৪১ নম্বর প্রশ্নটি ছিল- ‘মুসলমান রোহিঙ্গাদের উপর মায়েনমারের সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা সশস্ত্র হামলা চালায় কত তারিখে?
পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর থেকে এ দুইটি ‘সাম্প্রদায়িক প্রশ্ন’ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। তবে এ ধরনের প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া ঠিক হয়নি বলে তখন মন্তব্য করেছিলেন চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।