মেয়র হিসেবে না'গঞ্জবাসীর লিডার আমি: আইভী
হাসপাতাল থেকে ছাড় পেয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে আইভী বলেন, কারো সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই—মেয়র হিসেবে তিনি নারায়ণগঞ্জবাসীর লিডার।
আর সশস্ত্র আক্রমণ থেকে তাকে রক্ষা করার জন্য নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র।
যাওয়ার আগে এক সংবাদ সম্মেলনে আইভী যা বলেন, ‘আমি ভালো আছি, একদম সুস্থ, ভালো আল্লাহর রহমতে।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রতিদিন খোঁজখবর নেয়ার জন্য আইভী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি এবং ঘটনার দিন সশস্ত্র আক্রমণ থেকে তাকে রক্ষার জন্য নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। সশস্ত্র আক্রমণ থেকে নিরস্ত্র জনগণ ঝাঁপিয়ে পড়ে আমাকে রক্ষা করেছে। জীবনে এ রকম ভালোবাসা আর পাইনি। আমার সবকিছু নারায়ণগঞ্জের জনগণ। তারাই আমাকে বাঁচিয়ে রাখবে।
আইভী বলেন, নারায়ণগঞ্জবাসীর উদ্দেশে একটা কথা বলতে চাই, তারা যে সাহসী আইভীকে চেয়েছিল, সেই সাহসীকে নারায়ণগঞ্জবাসী পেয়েছে। অস্ত্রের ঝনঝনানির কাছে সত্যের-নৈতিকতার যে জয়, তাকে যে কেউ হারাতে পারে না, তা নারায়ণগঞ্জবাসী দেখিয়েছে। শান্তির নারায়ণগঞ্জ, শান্তির নারায়ণগঞ্জই থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আমার স্লোগান ছিল, নয় শঙ্কা নয় ভয়—শহর হবে শান্তিময়। আমার শহর শান্তিময় হতেই হবে। এ ব্যাপারে আমাকে সহযোগিতা করবেন আমাদের সবার অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমি ওনার ক্ষুদ্র কর্মী। আমার কোনো অভিযোগ নেই। রাজনীতিতে এ রকম হবেই।’
যে বিষয়কে কেন্দ্র করে তার ওপর হামলা, তার উল্লেখ করে মেয়র আইভী বলেন, ‘ফুটপাত দিয়ে মানুষ হাঁটবে। হকারদের জন্য আমি চারতলা বিল্ডিং করছি, তারা সেখানে যাবে। এটা আমার মেসেজ। ফুটপাত দিয়ে আমার মানুষ হাঁটবে, নাগরিকেরা হাঁটবে। হকাররা হকার মার্কেটে যাবে।’
তিনি বলেন, দেশ মধ্যম আয়ের দিকে যাচ্ছে। এই মধ্যম আয়ে নেয়ার জন্য সরকার যে কাজগুলো করছে, সেগুলো এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমাদের মনোবলকে কেউ পেছাতে পারবে না। আমরা আমাদের অ্যাচিভমেন্টে যাব, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে।
আইভী বলেন, ‘যেহেতু আমি একজন মেয়র, সিটি করপোরেশন পরিচালনা করি। আমার সিটির দায়দায়িত্ব আমার। আমার সিটির ভেতরে এসে কেউ এখতিয়ারবহির্ভূতভাবে কমান্ড করবে, সেটা নগরবাসী মেনে নেয়নি, ভবিষ্যতেও মেনে নেবে না। নগর কীভাবে চলবে সেই সিদ্ধান্ত নগরবাসী নেবে।’
আইভী বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিশ্বাসী না— আমি জানি, এই কয়েক দিনে অনেক কিছু হয়েছে। আমার সঙ্গে কারও রাজনৈতিক বা পারিবারিক বিরোধ নেই। বিরোধ যদি থাকে সেটা আদর্শগত, নীতিগত। কিন্তু সেখানেও আমি নমনীয়। আমি নারায়ণগঞ্জবাসীর উন্নয়ন চাই। আমার শহরকে শান্তিময় করতে চাই।’
আইভী বলেন, ‘আমি একজন ডাক্তার। রাশিয়ায় পড়ালেখা করে দেশসেবার জন্য ফিরে এসেছি। ২০০১ সালের নির্বাচনে ভরাডুবির পর আমি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে পাস করেছিলাম। আমি শেখ হাসিনার পরীক্ষিত সৈনিক। আমাকে বারবার পরীক্ষা দিতে হবে না। আমি আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী এবং নারায়ণগঞ্জের মেয়র হিসেবে আমি আমার শহরের লিডার। শেখ হাসিনার একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে আমি দেশবাসীকে সেবা দিতে চাই।’
মেয়র বলেন, ‘আমার ফুটপাত দিয়ে আওয়ামী লীগ হাঁটবে, বিএনপি হাঁটবে, আমার জনগণ হাঁটবে। এতে সব নাগরিকের অধিকার আছে। আমি যখন ট্যাক্স নেই, তখন সবার কাছ থেকে নেই। অ্যাজ এই সিটি লিডার, আমি সকলের মেয়র। আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে আমি শেখ হাসিনার একজন ক্ষুদ্র কর্মী, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মী।