কথাসাহিত্যিক শওকত আলী আর নেই
বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক শওকত আলী আর নেই—বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
জানা গেছে, বাবার শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় জ্ঞান ফিরছিল না। এ কারণে চিকিৎসকরা আজ ভোর ৫টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্টে রেখেছিলেন। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
গত ৪ জানুয়ারি ফুসফুসের সংক্রমণে আক্রান্ত হলে শওকত আলীকে ল্যাব এইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ৬ জানুয়ারি তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউতে) নেওয়া হয়।
এদিকে, কথাসাহিত্যিক শওকত আলীর মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে ভিড় করেন তার স্বজন, শুভানুধ্যায়ী এবং কবি-সাহিত্যিকরা।
শওকত আলী ১৯৩৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর দিনাজপুর জেলার থানা শহর রায়গঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছাত্র জীবনে কমিউনিস্ট আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও কিছুদিন পরে শিক্ষকতায় যোগ দেন তিনি।
বামপন্থিদের ‘নতুন সাহিত্য’ পত্রিকায় লেখালেখি করেন শওকত আলী। এছাড়া দৈনিক মিল্লাত, মাসিক সমকাল, ইত্তেফাকে তার অনেক গল্প, কবিতা ও শিশুতোষ লেখা প্রকাশিত হয়।
কথাসাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৯০ সালে একুশে পদক পান শওকত আলী। পরে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, হুমায়ুন কবির স্মৃতি পুরস্কার, অজিত গুহ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার পান। ‘দক্ষিণায়নের দিন’, ‘কুলায় কালস্রোত’ এবং ‘পূর্বরাত্রি পূর্বদিন’ উপন্যাসত্রয়ীর জন্য তিনি ‘ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার’ পান।
তার অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে, ‘পিঙ্গল আকাশ’, ‘প্রদোষে প্রাকৃতজন’, ‘অপেক্ষা’, ‘গন্তব্যে অতঃপর’, ‘উত্তরের খেপ’, ‘অবশেষে প্রপাত’, ‘জননী ও জাতিকা’, ‘জোড় বিজোড়’। ‘উন্মুল বাসনা’, ‘লেলিহান সাধ’, ‘শুন হে লখিন্দর’, ‘বাবা আপনে যান’সহ বেশ কয়েকটি গল্পগ্রন্থ সম্পাদনা করেছেন তিনি।