প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা যুবলীগের সম্মেলন হতে যাচ্ছে
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দীর্ঘ ১৪ বছর পর তার নিজ নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা যুবলীগের সম্মেলন হতে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দিয়েছেন। সম্মেলনের দিনক্ষন এখনো নির্ধারন হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কোটালীপাড়া যুব নেতাদের মধ্যে শুরু হয়েছে নেতৃত্বে আসার প্রতিযোগিতা। ইতোমধ্যে প্রায় ডজন খানেক সাবেক তুখোড় ছাত্রলীগ নেতা লবিং গ্রুপিং শুরু করেছেন। সেই সাথে তৎপর হয়েছে অনেক নতুন মুখ। তাদের ব্যানার, পোষ্টার, বিলবোর্ডে কোটালীপাড়া উপজেলা সদর ছেয়ে গেছে। উপজেলা জুড়ে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ।
যুবলীগের নেতৃত্বে আসতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাবুল হাজরা ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম হাজরা মন্নু জোর তৎপরতা শুরু করেছেন। এই দু’নেতা আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছেন। কোটালীপাড়া শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি হায়দার, শেখ কাইয়ুম হোসেনসহ প্রায় ডজন খানেক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নেতৃত্বে আসতে দিন রাত নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়াও কাজী অমিত, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তুষার মধু, ব্যবসায়ী লাভলু শেখ, রেজাউল করিম, বুলবুল হাজরাসহ অনেক নতুন কমিটিতে স্থান পেতে মাঠে ময়দানে রয়েছেন।
অপরদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মৃনাল কান্তি বিশ্বাস স্বপ্নীল কোটালীপাড়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি পদে প্রতিদন্দীতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কোটালীপাড়ার কৃতি সন্তান ঢাকার ব্যবসায়ী স্বপ্নীল কোটালীপাড়ার রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। তিনি এলাকার বিভিন্ন সমাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরাও উপজেলা কমিটিতে স্থান পেতে তৎপর হয়ে উঠেছেন।
জানা গেছে, ২০০৪ সালে বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান হাজরাকে আহবায়ক করে যুবলীগের ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, জাহিদুল ইসলাম, আতিকুজ্জামান খান বাদল, রুহুল আমিন খান, মিরাজ হোসেন, সুমন হোসেন বাচ্চু, নুরুল হোসেন নয়ন, ফরমান মুন্সি, মলয় কান্তি বল্লভ, মাসুদ রানা ও দিদারুল ইসলাম। ১১ জনের এই কমিটি থেকে সদ্য গঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে প্রচার সম্পাদক পদে মতিয়ার রহমান হাজরা, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক পদে আতিকুজ্জামান খান বাদল, সহ-দপ্তর সম্পাদক পদে রুহুল আমিন খান এবং কার্য নির্বাহী সদস্য পদে জাহিদুল ইসলাম, ফরমান মুন্সি ও সুমন হোসেন বাচ্চু স্থান পেয়েছেন।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য নজরুল ইসলাম হাজরা মন্নু বলেন, গত বৃহস্পতিবার আমিসহ কোটালীপাড়া উপজেলার বিভন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী যুবলীগসহ সহযোগী সকল সংগঠনের মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। জাতির পিতার আদর্শের একজন সৈনিক ও জননেত্রী শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড হিসেবে মাঠে কাজ করছি। দীর্ঘ দিন পদ পদবী বিহীন অবস্থায় থেকেও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশ নিয়ে আসছি। আশা করি সিনিয়র নেতৃবৃন্দ আমার কাজের মূল্যায়ন করে একটি সম্মান জনক পদ দিবেন।
উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য মাসুদ রানা বলেন, দীর্ঘ এক যুগের বেশী সময় ধরে আহবায়ক কমিটিতে আছি। আগামীতে যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে সেখানে আহবায়ক কমিটির ৫ নেতাসহ আমি একটি সম্মান জনক পদ পাবো। এমনটাই আশা করছি।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাবুল হাজরা বলেন, দীর্ঘ এক যুগ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। গত ২ বছর ধরে রাজনৈতিক কোন পদ পদবী নাই। তারপরও দলীয় কর্মকান্ডে অংশ গ্রহণ করে যাচ্ছি। আশা করি দল মূল্যায়ন করবে। দীর্ঘ দিন পদ পদবী বিহীন রাজনীতিতে সক্রিয় সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদেরকে তিনি কমিটিতে অন্তভূক্ত করার দাবি জানান।
সাবেক ছাত্র নেতা মৃনাল কান্তি বিশ্বাস স্বপ্নীল বলেন, আমি এলাকার মানুষের সেবা করতে চাই। ইতোমধ্যে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করছি। সেই সাথে যুব রাজনীতির নেতৃত্বে আসতে চাচ্ছি। হিন্দু অধ্যুষিত এ উপজেলায় আমি যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পেলে প্রধানমন্ত্রীর কাঙ্খিত বাংলাদেশ গড়ার কাজে নিজেকে উৎসর্গ করবো।
উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মতিয়ার রহমান হাজরা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি যুব সমাবেশ করে আমরা কোটালীপাড়া যুবলীগের গ্রহণযোগ্য একটি নতুন কমিটি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেব।