ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচকে (সিপিআই) এবার বাংলাদেশ দুই ধাপ উন্নতি করেছে।
বৈশ্বিক দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচকে (সিপিআই) এবার বাংলাদেশ দুই ধাপ উন্নতি করেছে। দুর্নীতির তালিকায় শীর্ষে থাকা দেশগুলোর মধ্যে এবার বাংলাদেশের অবস্থান ১৭তম, যা ২০১৬ সালের ধারণা সূচকে ছিলো ১৫তম।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্নীতির ধারণা সূচক ২০১৭ প্রকাশ করে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।
তিনি বলেন: ২০১৭ সালে বাংলাদেশ ০-১০০ স্কেলে ও অবস্থান উভয় বিবেচনায় ২০১৬ এর তুলনায় ২ ধাপ এগিয়েছে। ১০০ এর মধ্যে ৪৩ স্কোরকে গড় স্কোর হিসেবে বিবেচনায় বাংলাদেশের ২০১৭ সালের স্কোর ২৮ হওয়ায় দুর্নীতির ব্যাপকতা এখনো উদ্বেগজনক বলে মনে হয়। তাছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার ৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখনো বিব্রতকরভাবে আফগানিস্তানের পর দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ৩১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ চতুর্থ সর্বনিম্ন অবস্থানে। অতএব, উল্লিখিত সামান্য অগ্রগতি কোনো অবস্থাতেই সন্তোষজনক নয়। তবে অনুমান করা যায় যে, বাংলাদেশের আইনী, প্রাতিষ্ঠানিক ও নীতি কাঠামো তুলনামূলকভাবে সুদৃঢ় হয়েছে এই ধারণা থেকে সূচকে বাংলাদেশের স্কোর দুই বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু প্রয়োগের ঘাটতি, ব্যাংকিং ও অর্থনৈতিক খাতসহ বিভিন্ন খাতে ক্রমবর্ধমান অনৈতিক প্রভাব বিস্তার, অনিয়ম ও দুর্নীতি ও বিশৃংখলায় জড়িত সহায়তাকারী ও দায়ীদের উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিচারের আওতা তথা জবাবদিহিতা নিশ্চিতে সফল হতে না পারায় আমরা আরো ভালো করতে পারিনি।তাই এই উন্নতিকে সন্তোষজনক বলতে চায় না টিআইবি। সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির পক্ষ থেকে বলা হয়,সংসদ কার্যকর না হলে দুর্নীতি কমবে না। প্রকাশিত ধারণা সূচকে স্বস্তি আসতে পারে কিন্তু সন্তুষ্টির কোন সুযোগ নেই।
সিপিআই নির্ধারণ করতে দুর্নীতি ও ঘুষ আদান প্রদান, ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক দলের স্বার্থে সরকারি পদমর্যাদার অপব্যবহারের মতো বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া হয়।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে দুর্নীতি মামলায় সাজা প্রাপ্ত খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য না করেনি টিআইবি। এবিষয়ে টিআইবি জানায়, সংস্থাটি ব্যক্তি দুর্নীতি নিয়ে কাজ করে না।
টিআই’র এবারের সূচকে বাংলাদেশ গতবারের চেয়ে উন্নতি করলেও দক্ষিণ এশিয়ায় দুর্নীতিতে শীর্ষ হওয়া আফগানিস্তানের পরেই আছে বাংলাদেশ। তাই বাংলাদেশকে এক কথায় দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ না বলে এখানে অধিক মাত্রায় দুর্নীতি হয় বলে মনে করে টিআইবি।
২০১৭ সালের সিপিআই অনুযায়ী দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে কম দুর্নীতি হয় ভূটানে। এরপরেই আছে যথাক্রমে ভারত, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, পাকিস্তান ও নেপাল।