এবার ‘কাউয়া মুক্ত আওয়ামী লীগ চেয়ে’ পোষ্টার টাঙ্গাইলে....!
অন্তু দাস হৃদয়, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি :
গেল বছরের মার্চে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সিলেটে বিভাগীয় তৃণমূল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সংগঠনে ‘কাউয়া’ ঢুকছে বলে মন্তব্য করে ছিলেন।
ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের পর সারা দেশে দলের ভিতর-বাইরে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে ছিল ‘কাউয়া’।
বছর ঘুরতে না ঘুরতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফের ‘কাউয়া’ আলোচনায়।
তবে, এখন এটি আর কোনো রাজনৈতিক নেতার বক্তব্য নিয়ে নয়, রাতের অন্ধকারে শহর জুড়ে লাগানো পোষ্টার নিয়ে জল্পনার তুঙ্গে।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় বুধবার রাতের অন্ধকারে উপজেলা শহরের দোকান, স্কুল-কলেজের দেওয়ালের সামনে একটি পোষ্টার ছড়িয়ে দিয়েছে।
এই পোষ্টারে লেখা রয়েছে- ‘কাওয়া মুক্ত টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন চাই’, কাওয়া করে কা-কা দলের বাজে বারো টা’।
লেখাটির ডান পাশেই বড় একটি দাড় কাকের ছবি। তৃণমূল আওয়ামী লীগের ব্যানারে রাতের অন্ধকারে কে বা কারা এই ব্যানার লাগালো তা নিয়ে শহর জুড়ে চলছে আলোচনা।
পোস্টার গুলো জনগনের মধ্যে ব্যপক সাড়া ফেলেছে। কেউ-কেউ বলছেন, আওয়ামী লীগের পদবঞ্চিত নেতা কর্মীরাই এমন পোষ্টার লাগিয়েছেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরেই ছিলাম। কিন্তু কোথাও এই পোষ্টার চোখে পড়েনি।
কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে কলেজ রোডে আসতেই লাল রঙের একটি পোষ্টার দেয়ালে দেখতে পাই, একটু সামনে এগিয়ে গিয়েই দেখি আরও অসংখ্য পোষ্টার।
শুধু কলেজ রোডেই নয়, পুরো শহর জুড়েই এমন পোষ্টার দেখা যাচ্ছে। তবে কে বা কারা এই পোষ্টার লাগিয়েছে তা জানা যায়নি।
এর আগে গত (১৬ ফেব্রুয়ারি) ‘দাড় কাউয়া মুক্ত মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগ চাই’ লেখা সম্বলিত একটি বিলবোর্ডে ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ফের আলোচনায় আসে ‘কাউয়া’। এর ক’দিন পরেই টাঙ্গাইলে এমন পোষ্টার লাগানো হলো।
আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ‘কাউয়া’ শব্দটি জনপ্রিয় করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
গেল বছরের মার্চে সিলেটে বিভাগীয় তৃণমূল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন যে, সংগঠনে ‘কাউয়া’ (কাক) ঢুকছে।
তিনি বলেন, ‘প্রচার লীগ, তরুণ লীগ, কর্মজীবী লীগ, ডিজিটাল লীগ, হাইব্রিড লীগ আছে। কথা হাছা, সংগঠনে কাউয়া ঢুকছে। জায়গায় জায়গায় কাউয়া আছে। পেশাহীন পেশিজীবী দরকার নেই। ঘরের ভেতর ঘর বানানো চলবে না। মশারির ভেতর মশারি টানানো চলবে না।’
এরপর থেকে তার দেয়া উপাধি অনুযায়ী দলে অনুপ্রবেশ কারীদের ‘কাউয়া’ বলে অভিহত করেন দলের ত্যাগী নেতারা। দলের তৃণমূল মনে করে, দলের মধ্যে যেসব অনুপ্রবেশকারী ঢুকে থাকে, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট জরিপ হওয়া প্রয়োজন। এরা অনেকক্ষেত্রেই দলের জন্য ক্ষতিকর।
মূলত কাউয়া বলতে গত বছর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি-জামায়াত, বিভিন্ন বাম দল এবং জাতীয় পার্টি থেকে দলে এসে দীর্ঘ দশ বছরে তাদের বিপুল অর্থ ভা-ার তৈরি করেছেন তাদের বুঝে থাকে আওয়ামী লীগের কর্মীরা।