বেসরকারি মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেডের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার জন্য এনবিআরের দেয়া নির্দেশ
বেসরকারি মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেডের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার জন্য এনবিআরের দেয়া নির্দেশ স্থগিত করেছেন উচ্চ আদালত।
এ সিদ্ধান্তের পরপরই রবি’র ব্যাংক একাউন্ট সক্রিয় হয়েছে। তবে এনবিআর বলছে, রবি কর্তৃপক্ষ রাজস্ব ফাঁকির বিষয়ে উচ্চ আদালতে ভুল তথ্য দিয়ে ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ স্থগিত করিয়েছে।
প্রায় ১৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে সোমবার দুপুরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিউ)মূল্য সংযোজন কর (মূসক) শাখা ৩ দিনের জন্য রবি’র ব্যাংক হিসাব জব্দ করে।
মঙ্গলবার রবি’র এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের বেঞ্চ রবি’র ব্যাংক হিসাব জব্দ করার জন্য এনবিআরের নির্দেশ স্থগিত করতে এ আদেশ দেন।
আদালতের রবির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তানজিব উল আলম এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনিরুজ্জামান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলটিইউ-মূসকের কমিশনার মো. মতিউর রহমান চ্যানেল আই অনলঅইনকে বলেন, রবি উচ্চ আদালতে রাজস্ব ফাঁকির বিষয়ে সঠিক তথ্য দেয়নি বলে আমি জেনেছি। তারা উচ্চ আদালতে ভুল তথ্য দিয়ে ব্যাংক জব্দের নির্দেশ স্থগিত করিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিস্তারিত আগামীকাল জানানো হবে বলে জানান তিনি।
মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর ২৬ ধারা অনুযায়ী রবির রাজস্ব ফাঁকি উৎঘাটনে এলটিইউ রবির ট্রায়াল ব্যালেন্স, প্রতিষ্ঠানের ভাড়া, সিম বিক্রি, বিটিসিএল এর ইনভয়েস তথ্যাদি সংগ্রহ করে।
এসব তথ্যাদি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, রবি আজিয়াটা লিমিটেড ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪ মাসে ১০ কোটি ৩৫ লাখ ২৬ হাজার ৯৫ টাকার অপরিশোধিত সম্পূরক শুল্ক, ৬ কোটি ৭৪ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬১ টাকার স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার উপর অপরিশোধিত মূসক, ৮১ লাখ ৬ হাজার ২০২ টাকা ৬৫ পয়সা সিমের উপর কম প্রদর্শিত সম্পূরক শুল্ক ও মূসক এবং বিটিসিএলকে প্রদত্ত সেবার উপর প্রযোজ্য অপরিশোধিত মূসক বাবদ ৮১ লাখ ৭১ হাজার ৯৭৪ টাকাসহ মোট ১৮ কোটি ৭২ লাখ ৮৮ হাজার ৩২ টাকা ৭০ পয়সার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। এ ফাঁকিকৃত রাজস্ব আদায়ে ব্যবস্থা নিতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক হিসাব ৩ কার্যদিবসের জন্য জব্দ করা হয়েছিল।
এর আগেও রবির বিরুদ্ধে প্রায় ৯২৪ কোটি ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ উঠে।
এ পাওনা আদায়ে চূড়ান্ত দাবিনামা জারি করেছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ)-মূল্য সংযোজন কর শাখা।
এসব বকেয়া আদায়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি রবিকে পৃথক পাঁচটি চিঠি পাঠানো হয়। এলটিইউ-মূসকের কমিশনার মো. মতিউর রহমান সই করা চিঠিগুলো রবি আজিয়াটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়।
ওই সময় বলা হয়, মূসক আইন অনুযায়ী চূড়ান্ত দাবিনামা জারির পর ভ্যাট পরিশোধ না করলে পাওনা আদায়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হতে পারে।