আক্কেলপুরের দোল মেলায় আসা বেদে স্বামীকে অস্ত্র ধরে স্ত্রীকে গণধর্ষন প্রাণেরভয়ে পালাতক ধর্ষিত পরিবার
জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ নিরেন দাস।
জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের প্রতি বছরের মতো ৫ শত বছরের ঐতিহ্যবাহী দোলযাত্রা মেলায় দেশের দূর দূরান্ত থেকে পেটের দায়ে দুটি টাকা উপার্জনের জন্য আসা নানা শ্রেণী পেশাদারদের দোল মেলায় আগমন ঘটে। যা এবারো উক্ত মেলা বেদে পরিবার গুলি সাঁপ খেলা দেখিয়ে টাকা উপার্জন করতে এসে গণধর্ষনের শিকার হলেন এক বেদেনী নারী।
দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার সাংবাদিক, মোঃ রবিউল ইসলাম রুবেল এর সহযোগীতায় চ্যানেল ফোর টিভি প্রত্যক্ষ ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারে যে। প্রতিবছরের মতো এবারো দোল মেলাতে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা থেকে দুটি বেদে পরিবার মেলাতে তাদের পেশা সাঁপ দেখিয়ে অর্থ উপার্জন করতে আসে এবং সেই বেদে পরিবার দুটি রাত্রিযাপনের জন্য উক্ত ইউপির আলীমামুদপুর গ্রামে অস্থায়ী তাবু বানিয়ে আশ্রয় নিয়ে রাত্রিযাপন করছিলেন তারা।
কিন্তু গত ৮ এ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের রাত্রিতে গণধর্ষিত হলেন অসহায় বেদেনী এক নারী। যে গণধর্ষনের বিবরণে জানা যায় যে ৮ এ মার্চ বেদেনী নারী সারাদিন মেলাতে সাঁপ খেলা দেখিয়ে ক্লান্ত শরীরে সন্ধায় তারা তাদের অস্থায়ী তাবুতে ফিরে যায় রাত্রি যাপনের জন্য এমনকি তারা রাতের খাওয়াদাওয়া সেরে ঘুমাতে গেলে প্রচুর মশার উৎপাতে বেদে পরিবার দুটি আলীমামুদপুর গ্রামের একটি দোকানে মশার কয়েল কিনে তারা তাদের তাবুতে ফিরে গেলে গভীর রাতে দুই বেদে পরিবারকে চারজন ব্যক্তি তাদেরকে ভূয়া পরিচয় দিয়ে ফাঁকা মাঠে নিয়ে যায় যেখানে আরও দুই জন ব্যক্তি এসে হাজিড় হয়ে একটি বেদে পরিবার তাদের আশ্রয় তাবুতে পাঠিয়ে দিয়ে এক পরিবারকে আটকে রেখে সেই পরিবারের বেদেনীর স্বামী কে অস্ত্র ধরে বেদেনী নারীকে ছয়জন ব্যক্তি ভোররাত পর্যন্ত পালাক্রমে গণধর্ষন চালিয়ে তাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।
এমন একটি ঘটনা সম্পর্কে গোপীনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ জোয়াদ্দারের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলেন যে বৃহস্পতিবার সকালের ধর্ষিতা ও তার স্বামী গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদে আমার কাছে এসে তাদের সাথে রাতে ঘটে যাওয়া সকল ঘটনা খুলে বলে বিচারের দাবী করেনি ধর্ষিত বেদে পরিবার। কিন্তু আমি তাদের সকল ঘটনা শুনে এবং তাদের অসহায়ত্ব দেখে তাদের বলি যে এমন নেক্কারজনক ঘটনার বিচার করার মতো ক্ষমতা আমার নেই এই ঘটনার বিচারের একটি রাস্তা তা হচ্ছে আইন। যে আইনি আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দিয়ে অসহায় সেই বেদে পরিবারকে আমি ৫ শত টাকা দিয়ে আক্কেলপুর থানায় মামলা করতে পাঠিয়ে দেই কেননা বেদেনী নারীকে শুধু তারা গণধর্ষনি করেনি সাথে তাদের কয়েকদিনের উপার্জিত নগদ ৫ হাজার টাকাও ছিনিয়ে নিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা।
চেয়ারম্যান আরও বলেন আমি আক্কেলপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা ওসির সাথে কথা বলেছি মামলাটি নেওয়ার জন্য।
শুক্রবার পেরিয়ে শনিবার দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেও ধর্ষিতা বেদেনী আক্কেলপুর থানায় আসেননি এবং কোন মামলা বা অভিযোগও দায়ের করেননি এমনকি সেই ধর্ষিতা বেদে পরিবারকেও খুঁজে পাওয়া না গেলে সাংবাদিক রবিউল ইসলাম রুবেল মেঠো ফোনে ধর্ষিতার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন " সাহেব আমরা গরীব ঠিকানাহীন মানুষ পাশে কে দাঁড়াবে তারা যে আমাদের মেরে ফেলবে সাহেব তাই আমরা থানায় না গিয়ে পালিয়ে এক আত্মীয়র বাসায় এসেছি। ধর্ষিতা আরও বলেন আমার সাথে যা ঘটেছে তবুও বেঁচে আছি এমনটাই বলেন গণ ধর্ষনের শিকার বেদেনী নারী।
ধর্ষিতা বেদে পরিবার প্রাণের ভয়ে পালিয়ে গেলেও থেমে নেই প্রশাসন, ঘটে যাওয়া গণ ধর্ষনের বিষয়ে দোষীদের ধরতে আক্কেলপুর থানার পুলিশ তদন্ত সহ ইতিমধ্যে আমীমামুদপুর গ্রামে অভিযানও চালিয়েছেন এবং যে দোকান থেকে বেদে পরিবার গুলি মশার কয়েল কিনেছিলেন সেই দোকানদার এখন পর্যন্ত আত্মগোপনে আছেন। এমনকি আলীমামুদপুর গ্রামের নৈশপহরী ইউপির চোকিদার রামবিলাশ বলেন যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের চিনতে পারবে ঐ দোকানদার।