বিমান বিধ্বস্ত: ১৭ বাংলাদেশির মরদেহ সোমবার দেশে ফেরানোর প্রস্তুতি
নেপালের কাঠমাণ্ডুর ত্রিভূবন বিমান বন্দরে ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ২৬ জনের মধ্যে পরিচয় শণাক্ত হওয়া ১৭ বাংলাদেশির মরদেহ আগামীকাল-সোমবার দেশে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
ভারত ও নেপাল সরকারের অনুমোদনের পর বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে করে মরদেহগুলো ঢাকায় নেয়া হবে।
কাঠমাণ্ডুতে বাংলাদেশ দূতাবাসের ফাস্ট সেক্রেটারি আল আলামুল ইমাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষও ১৭ জনের মরদেহ ঢাকায় পাঠানোর কথা জানিয়েছে।
এছাড়া দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আরও তিন থেকে চার জনের মরদেহ ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়াই শণাক্ত করা যেতে পারে।
রোববার আহত আরো একজন ঢাকায় আনার পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চিকিৎসাধীন আহতদের শারিরীক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে তবে তারা পুরোপুরি শংকামুক্ত নন বলে জানিয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
নেপালে ইউএস-বাংলার বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পাঁচ দিন পর ফরেনসিক পরীক্ষা শেষে মরদেহগুলো শনাক্ত করতে নিকট স্বজনদের দেখানো হয়।
গতকাল সন্ধ্যায় নেপালের ইউনিভার্সিটি টিচিং হাসপাতালের মহারাজগঞ্জ ক্যাম্পাসের ইনস্টিটিউট অব মেডিসিনের সামনে ফরেনসিক বিভাগের প্রধান প্রমোদ শ্রেষ্ঠা ২৬ মরদেহের মধ্যে শনাক্ত হওয়া ১৭ জনের পরিচয় তুলে ধরেন।
রোববার ওইসব মরদেহ ঢাকা পাঠানোর কথা জানান ইউএস-বাংলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আফিফ।
এদিকে, নেপালে বিমান বিধ্বস্তের পরবর্তী ব্যবস্থার অগ্রগতি তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী জানান, যাদের মরদেহ এরই মধ্যে শনাক্ত হয়েছে তাদেরকে সোমবার ঢাকায় আনা হচ্ছে। বাকিদের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমেই শনাক্ত করা হবে।
এরই মধ্যে ঢাকায় আসা আহতদের চিকিৎসার অগ্রগতি তুলে ধরেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. সামন্ত লাল সেন।
তিনি জানান, আহতদের শারিরীক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও তারা আশংকামুক্ত নয়, মানসিকভাবে ভারাক্রান্ত রয়েছেন তারা।
বিমান দুর্ঘটনায় আহত যাত্রী শাহিন বেপারীকে রোববার ঢাকায় আনা হয়েছে। এরআগে দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া আহত ১০ জনের মধ্যে শুক্রবার তিনজন ও শনিবার দুজনকে দেশে এনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উন্নতর চিকিৎসার জন্য গুরুতর আহত একজনকে কাঠমাণ্ডু থেকে সিঙ্গাপুরে ও আরেকজনকে দিল্লিতে নেয়া হয়েছে।
শনিবার পর্যন্ত দেশে ফেরা পাঁচ জন হলেন- শাহরিন আহমেদ, মেহেদী হাসান, সাঈদা কামরুন্নাহার স্বর্ণা, আলমুন্নাহার অ্যানি ও রাশেদ রুবায়েত। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে তারা ভর্তি আছেন।
গত ১২ মার্চ কাঠমাণ্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়। ৭১ আরোহীর মধ্যে ৪৯ জনের মৃত্যু হয় সেদিন। তাদের মধ্যে চার ক্রুসহ ২৬ জন ছিলেন বাংলাদেশি।