জামালপুর পৌর সভার ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়ক সাংবাদিক সভায় তুপের মুখে পৌর মেয়র
মিঠু আহমেদ, জামালপুর 4TV : জামালপুর পৌর সভার ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়ক সাংবাদিক সভায় প্রশ্নবানের তুপের মুখে পড়েন পৌর মেয়র মির্জা সাখাওয়াতুল আলম মনি। সাংবাদিকদের কোন প্রশ্নের জবাব তিনি দিতে পারেননি। প্রতিটিই প্রশ্ন তিনি শাক দিয়ে মাছ ডাকার মতো এড়িয়ে যান। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বিশাল আকারের একটি বাজেট উপস্থাপন করেন। বাজেটে আয় ধরা হয়েছে ১৬৮,২৫,৩৪,৬৮৯.০৭ (একশত আটষষ্টি কোটি পচিশ লাখ চৌত্রিশ হাজার ছয়শত উননব্বই টাকা সাত পয়সা), বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের ব্যায় ধরা হয়েছে ১৬৫,৬৮,১১,৪৮২ (একশত পয়ষট্টি কোটি আটষট্টি লাখ এগার হাজার চারশত বিরাশি)। গতকাল বুধবার সকালে জামালপুর পৌরসভার হলরুমে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ বাজেট প্রেস করেন।
সাংবাদিকরা বলেন, জামালপুর পৌরসভা হচ্ছে একটি প্রথম শ্রেণীর পৌর সভা হওয়া স্বত্তে¡ও কেন সাধারণ নাগরিকরা ১ম শ্রেণীর পৌরসভার সুফল ভোগকরতে পারছে না। মশা নিধনের জন্যে গত বছরের দেয়া বরাদ্ধ গেল কোথায়, জেলার কোথাওতো মশা নিধনের স্প্রে করা হয়নি, পৌর শহরের প্রতিটি এলাকার রোড লাইট কেন বিকল, ড্রেনেজ ব্যবস্থা কেন উন্নত করা হচ্ছে না। একটু বৃষ্টি হলেও রাস্তায় কেন কোমর পানি জমে থাকে, জেলা শহরের প্রতিটি রাস্তাই কেন ভাঙাচুড়া, সেগুলো বছরের পর বছর পড়ে থাকলেও মেরামতের কেন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। লাইসেন্স বিহীন গাড়ি চলে কেমনে, ১৫ হাজার অটোর মধ্যে লাইসেন্স রয়েছে মাত্র ৩ হাজার অটোর, কেন যানজট নিরসনে উদ্যোগ নেওয়া হয় না, নতুন শহর উন্নয়নের প্রকল্পের বাজেট থাকলেও উন্নয়ন কেন করা হয়নি, কিছু কিছু ওয়ার্ডে ড্রেনগুলি থাকলেও সেগুলি প্রায় ৩০-৩৫ বছর যাবৎ বন্ধ করে ফেলেছে স্থানীয়রা, প্রতিটি রাস্তার ফুটপাত কেন দখল করে রাখা হয়েছে, পথচারীরা হেটে যেতে পারেনা? আপনার পৌরসভার মাধ্যমে যে রাস্তাগুলি করা হয় তা ছয়মাসও টিকেনা কেন? তাহলে আপনিই বলেন, প্রতিবছর যে বিশাল আকারের বাজেট করা হয় সেগুলি যায় কোথায়? একশত পয়ষট্টি কোটি আটষট্টি লাখ এগার হাজার চারশত বিরাশি টাকা আপনি কোথায় ব্যয় করবেন? নাকি শুধু কাগজে কলমেই রয়ে যাবে। গত অর্থ বছরেও বিশাল আকারের বাজেট থাকলেও পৌর শহরে উল্লেখযোগ্য দৃশ্যমান তেমন কোন কাজ করা হয়নি।
পৌরবাসীরা জানান, জামালপুর পৌর সভার প্রতি বছরই বিশাল বিশাল বাজেট পাশ করা হয় শুনে আসছি। কিন্তু দৃশ্যমান কোন কাজ এখনও চোখে পড়েনি। যা করা হয় তা শুধু নামে মাত্র করা হয়। বাকীসব কাগজে কলমেই রয়ে যায়। আমরা সব ধরনের নাগরিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছি।
পৌর মেয়র মির্জা সাখাওয়াতুল আলম মনি বলেন, গতবছরের বাজেটে বরাদ্দের কাজগুলি আস্তে আস্তে করার চেষ্টা করছি। এছাড়াও গত ও বর্তমান বছরের বাজেটের কাজগুলিও পর্যায় ক্রমে করার ব্যবস্থা করবো। বৃষ্টির জন্যে রাস্তা ও ড্রেনের কাজগুলিও করা সম্ভব হচ্ছে না। মশা নিধনের বরাদ্ধ চলতি বাজেটের সাথে সমন্বয় করা হয়েছে, রোড লাইটগুলিও সব সচল করা হবে, তৃতীয় শহর উন্নয়ন প্রকল্পের কথা বলতেই তিনি পাশ কাটিয়ে সাংবাদিক সভার সমাপ্ত ঘোষণা করেন।