গাজীপুর সিটি নির্বাচনে অনিয়ম হলে কঠোরভাবে দমন: রিটার্নিং কর্মকর্তা
প্রার্থী, সমর্থক বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে কেউ অনিয়ম করলে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে বলে হুঁশিয়ার দিয়েছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডল।
সোমবার নগরীর বঙ্গতাজ অডিটোরিয়াম থেকে ভোটের সরঞ্জাম বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।তিনি বলেন, যদি কেউ নির্বাচনে অন্যায়-অনিয়ম করে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের কড়া মেসেজ দেয়া হয়েছে, নির্বাচনের কাজে যদি বিঘ্ন সৃষ্টি করে, সে প্রার্থী হতে পারে বা সমর্থক হতে পারে, বা কোনো অফিসিয়াল হতে পারে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা আমরা কড়া আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
কাল- মঙ্গলবার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট দেবে গাজীপুরবাসী। ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন ভোটারের ভোট নিতে ৪২৫টি কেন্দ্রে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
সাতজন মেয়র প্রার্থীর পাশাপাশি কাউন্সিলর পদে ২৫৬ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৮৪ জন প্রার্থী এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন বলেন, সুষ্ঠু ভোট করতে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি তারা গুছিয়ে এনেছেন।
তিনি বলেন, আমরা অত্যন্ত ভালো নির্বাচন অনুষ্ঠান করব। এক্ষেত্রে আমরা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সহায়তা পাচ্ছি। নির্বাচন কমিশন থেকেও জানানো হয়েছে, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট হবে। সাড়ে ১১ লাখ ভোটার যাতে ভোট দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, আমরা সেটার ব্যবস্থা করেছি।
নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য স্ট্রাইকিং ফোর্সের পাশাপাশি বিজিবি, র্যা ব ও পুলিশের প্রায় ১৩ হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবেন বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা।
ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ফিফটি পার্সেন্ট মহিলা ভোটার, তারা যেন ভোটগ্রহণের দিন বাড়িতে বসে না থাকে, সেজন্য আমরা ব্যবস্থা করেছি। আমি মনে করি, এই নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবর্তীতে একটি সুন্দর মেসেজ যাবে, সংসদ নির্বাচন যাতে ভালো হয় সে ব্যাপারে।
এক প্রশ্নের উত্তরে রকিব মণ্ডল বলেন, আমরা বিভিন্নভাবে প্রার্থীদের মিটিংয়ে বলেছি, কোনো ধরনের গুজব-অনিয়ম করা যাবে না। ভোটারদেরকে আমরা বারবার বলেছি, বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে এবং বিভিন্ন লিফলেট, হ্যান্ড বিল এবং মাইকিং করে বিভিন্ন তথ্য ও ভোট দেয়ার প্রক্রিয়াগুলো জানানো হয়েছে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে, ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন।
রকিব মণ্ডল বলেন, প্রশাসন বা কোনো কর্তৃপক্ষ যদি নির্বাচনে বাধার সৃষ্টি করে, প্রত্যক্ষভাবে হোক বা পরোক্ষভাবে হোক, আমরা কাউকে ছাড় দেব না। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। তবে সব অথরিটি আমাদের আশ্বস্ত করেছে, তারা সার্বিকভাবে সহায়তা করবে। কোনো রকম অন্যায়-অনিয়ম কোনোভাবে বরদাস্ত করবে না, এ বিষয়ে আমাদের সাথে একমত পোষণ করেছেন তারা।
বিএনপি কর্মীদের ‘নির্বিচারে গ্রেপ্তার এবং ভয়ভীতি দেখাচ্ছে পুলিশ –এ অভিযোগ দলটির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার করে আসছেন- সে বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা।
জবাবে তিনি বলেন, তারা অভিযোগ করলে আমরা সাথে সাথে আমলে নিচ্ছি। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে এবং মৌখিকভাবে অবহিত করছি। তদপুরি কমিশনে আমরা চিঠি দিচ্ছি। কমিশন থেকেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছে।
কালকে পুলিশ সুপারকে লেখা একটি চিঠি আমরা পেয়েছি, যাতে বলা আছে, ফেরারি ছাড়া কাউকে বিনা কারণে হয়রানি করা যাবে না এবং নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করা যাবে না। সে বিষয়টি আমরা প্রার্থী হাসান সরকারকেও জানিয়েছি, অন্য প্রার্থীদেরও জানিয়েছি।
পুলিশ সুপারকেও জানিয়েছি, যাতে সবাই সচেতন থাকে বলে জানান তিনি।
সব মিলিয়ে গাজীপুরবাসীকে একটি ‘সুন্দর নির্বাচন’ উপহার দেয়া সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
গাজীপুরে ৪২৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ছয়টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেবে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া তিনটি কেন্দ্রে বসানো সিসি ক্যামেরা থেকে সরাসরি নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নজর রাখতে পারবে নির্বাচন কমিশন।