লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বৃদ্ধি, ১০ হাজার মানুষ পানি বন্দি
আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট
ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তিস্তা, ধরলা ও সানিয়াজান নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটের ৫ উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যার পানিতে নদীর তীরবর্তী এলাকা গুলোর প্রায় ১০ হাজার মানুষ বন্দি হয়ে পড়েছে। গত শনিবার মধ্য রাত থেকে নদী গুলোর পানি বাড়তে শুরু করে। জেলার হাতীবান্ধায় অবস্থিত দেশের বৃহৎতম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের দোয়ানী পয়েন্টে রোববার দুপুর ১২ টায় বিপদ সীমার ৪ সেঃ মি ঃ নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে থাকে ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড দোয়ানী-ডালিয়া সুত্র জানা গেছে, তিস্তা পাড়ের লোক জনের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। ভারত গজল ডোবা ব্যারেজের অধিকাংশ গেট খুলে দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই ঘর বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছে। প্রচন্ড গতিতে পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। আরও কি পরিমাণ পানি আসবে তা ধারনা যাচ্ছে না। পানি গতি নিয়ন্ত্রন করতে তিস্তা ব্যারেজের অধিকাংশ গেটই খুলে দেয়া হয়েছে। তিস্তার পানিতে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বহুল আলোচিত ছিটমহল আঙ্গোরপোতা- দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সিন্দুনা, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন, পার্শ্ববতী কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার বেশ ইউনিয়নের চর এলাকার ২০ গ্রামের ১০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। কয়েক হাজার একর আমন ধানের ক্ষেতসহ অনেক ফসলী ক্ষেত তিস্তার পানিতে ডুবে গেছে। হাতীবান্ধা উপজেলার ধুবনী গ্রামের অস্থায়ী বাঁধ গুলো হুমকির মুখে পড়েছে। এ বাধ গুলোঁ ভেঙ্গে গেলে তিস্তার পানি হাতীবান্ধা শহরে ঢুকে পড়বে। ইতোমধ্যে চর এলাকা গুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে গেছে। চর এলাকা গুলো থেকে খবর আসছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। এখনও পানি বন্দি পরিবার গুলোর মাঝে কোন খাবার বিতরণ করতে দেখা যায়নি।
সুত্র জানায়, তিস্তা পানি আরও বৃদ্ধি পেলে তিস্তা ব্যারেজ রক্ষার্থে পাউবো ‘ফ্লাড বাইপাস’ কেটে দিতে পারে। এ বাধঁ কেটে দিলে গোটা লালমনিরহাট জেলার লক্ষাধিক পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়বে। এতে কোটি কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতি হবে।
হাতীবান্ধা উপজেলার চর ধুবনীর আইয়ুব আলী, কিসমত লোহালীর সফিয়ার রহমান, পাটিকাপাড়ার রফিকুলসহ অনেক পানি বন্দি পরিবার অভিযোগ করেন, আমরা পানি বন্দি অবস্থায় আছি। এখন পর্যন্ত আমাদের মাঝে কোন ত্রাণ বিতরণ করা হয়নি। কেউ আমাদের খোঁজ পর্যন্ত করেনি।
হাতিবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, ভারতের গজল ডোবা ব্যারেজের গেট খুলে দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে পানি বন্দি পরিবার গুলোর খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।