বেনাপোল চেকপোস্টে তল্লাশীকেন্দ্রে জুন মাসে কোটি টাকার মালামাল জব্দ
শহিদুল ইসলাম,বেনাপোল প্রতিনিধি 4TV
যশোরের বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে তল্লাশি কেন্দ্রের দায়িত্বরত কাস্টমস্ কর্মকর্তারা অভিযান চালিয়ে গত জুন মাসে ১৯৪টি ডিটেনশন মেমোর( সাময়িক আটক পত্র) মাধ্যমে ভারত থেকে আসা বাংলাদেশী ও ভারতীয় পাসপোর্ট যাত্রীদের ব্যাগেজ সুবিধার অতিরিক্ত মালামাল জব্দ করে প্রায় এক কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে। জব্দকৃত মালামালের মধ্যে রয়েছে শাড়ি, থ্রিপিস, জুতা, কসমেটিকস্, চকলেট, আগরবাতি এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ভারতীয় মদ। তবে ভারতীয় ব্যাগেজ পার্টির কাছ থেকে জব্দকৃত মালামালের কোন ডিটেনশন মেমো দেওয়া হয়নি। তাদের কাছ থেকে জব্দকৃত মালামালের কোনো ভারতীয় দাবিদার না হওয়ায় সে সব মালামাল মালিকবিহীন ভাবে সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে কাস্টমস্ কর্তৃপক্ষ।
দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে একটি সিন্ডিকেটের সদস্যরা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ব্যাগেজ ব্যবসার সহায়তা করে আসছিল। ব্যাগেজ ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হওয়ায় কাস্টমস্ এবং বিজিবির অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার ভুয়া পরিচয় দিয়ে এ সব সিন্ডিকেট সদস্য প্রতিদিন প্রায় ৪শ ব্যাগেজ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জনপ্রতি ২ থেকে ৩ হাজার টাকা আদায় করে আসছিল। আদায়কৃত এসব টাকা সপ্তাহ শেষে বেনাপোলে কর্মরত বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত সদস্যদের মাঝে ভাগ-বাটোয়ারা করে দিয়ে আসছিল এসব সিন্ডিকেট সদস্য। প্রতিদিন ভারত থেকে আসা ব্যাগেজ ব্যবসায়ীরা লাখ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ব্যাগেজ সুবিধার অতিরিক্ত মালামাল নিয়ে আসছিল।
এ ব্যাপারে বেনাপোলের আমদানিকারক সোহান ট্রেডিং এর মালিক জানান, ব্যাগেজ ব্যবসার কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ছোট ছোট আমদানিকারক ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা যেসব মালামাল ভারত থেকে আমদানি করে সর্বনিম্ন ১০০টাকার নিচে বাজারে বিক্রি করতে পারি না,সে সব মালামাল ব্যাগেজ ব্যবসায়ীরা বিক্রি করে থাকেন ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। এ কারণেই অনেক পণ্যর আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। আর আমদানি বন্ধ হওয়ায় সরকার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে ব্যাগেজ ব্যবসায়ীরা। বেনাপোল কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ জাকির হোসেন জানান, আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে যাত্রীসেবা অধিকতর নিশ্চিতকল্পে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সেই সাথে এই চেকপোস্টকে ব্যবহার করে যেন কোন অসাধু চক্র ব্যাগেজ ব্যবসার মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাচালান, মুদ্রা পাচারের মত কোনো অপরাধ করতে না পারে সে বিষয়ে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে।