ঝিনাইদহ শহরের পয়রা চত্তরে অনুষ্ঠিত হলো গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা
জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহ
আবহমান বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় অনুষঙ্গ লাঠি খেলা। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হারাতে বসেছে বাংলার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী এ খেলা। একই সঙ্গে হুমকির মুখে পড়েছে এই খেলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের জীবন-জীবিকাও। তারপরও অনেককেই এখনও দেখা যায় খেলাটি খেলতে। ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান খোকা’র উদ্যোগে এমনই এক আসর বসেছিল শহরের পায়রাচত্বরে। চমৎকার এই আয়োজন দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে হাজির হন অসংখ্য দর্শক। দর্শনার্থীরা জানান, আবহমান গ্রাম বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় লাঠি খেলা। বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে মানুষ এখন ভুলতে বসেছে এক সময়ের জনপ্রিয় এই খেলাটি। এ খেলাটি সত্যি মনমুগ্ধকর। এমন আয়োজন যেন প্রতিবছর করা হয়। প্রচন্ড রোদ আর গরম উপক্ষো করে সাধারণ মানুষ ভিড় করেন এ লাঠিখেলা উপভোগ করতে। বর্ণিল সাজে লাঠি হাতে লাঠিয়ালরা অংশ নেন এ খেলায়। ঢাকঢোল আর বাঁশির তালে আনন্দে উল্লাসে মেতে ওঠেন সবাই। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে নানা বয়সের মানুষ রং-বেরঙের পোশাক পরে মাঠে নামেন লাঠি খেলতে। মানুষের এ উচ্ছাস প্রমাণ করে লাঠি খেলা নিয়ে মানুষের আগ্রহ আছে। কিন্তু লাঠি খেলা নতুন দল তৈরি হচ্ছে না। যে কারণে, এখন লাঠি খেলার আয়োজন হয় না নিয়মিত। তবে যারা লাঠি খেলেন, তাদের এ ঐতিহ্য ধরে রাখার আগ্রহ আছে। খেলোয়াড়রা শৈলকুপা উপজেলার হাটফাজিলপুর গ্রামের রইচ উদ্দিন বলেন, পূর্বপুরুষরা এ খেলা করত। আমরা সেই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এ খেলায় নিয়মিত অংশ নিই। ঝিনাইদহ কলেজের শিক্ষার্থী হাজেরা খাতুন বলেন, আমি এই প্রথম লাঠিখেলা দেখলাম। খুবই আনন্দ উপভোগ করলাম। হারানো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতেই লাঠি খেলার এমন আয়োজন প্রতিনিয়ত করার দাবি তার। এ ব্যাপারে আয়োজক বাংলাদেশ লাঠিয়াল বাহিনী ঝিনাইদহ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান খোকা বলেন, আমাদের পুরানো ঐতিহ্যকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতেই আমাদের এ আয়োজন। ৬০ দশক থেকে প্রচলিত এ লাঠিখেলাকে আজও গ্রাম ও শহরের বুকে ধরে রাখতে স্থানীয়দের পাশাপাশি সরকারকেও এগিয়ে আসার আহŸান জানান তিনি।