কালীগঞ্জে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে স্বামী
লোকমান হোসেন পনির, কালীগঞ্জ (গাজীপুর)
কালীগঞ্জে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে দুইদিন ঘরে আটকিয়ে রাখার পর কৌশলে বাড়ি থেকে বের হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। দাবিকৃত যৌতুক ৪ লাখ টাকা দিতে অপরাগত জানালে ১৬ জুলাই স্ত্রীর ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায় স্বামী। বুধবার কৌশলে স্ত্রী তার স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে বাপের বাড়ি বক্তারপুর আসলে রাতে তাকে কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রো ভর্তি করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার স্ত্রী মুন্নি বাদী হয়ে স্বামী মো. শহিদুল্লাহ, শ^শুর আতিকুল্লাহ ও শাশুড়ি সুফিয়া বেগমকে আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এই সংক্রান্ত অভিযোগ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. শাহিনুর ইসলাম।
যৌতুকের বিষয় অস্বীকার করে স্বামী শহিদুল্লাহ বলেন, আমি স্ত্রীকে মারধর করেছি। তাকে পানি আনতে বললে সে পানি আনেনি। আমাকে খারাপ ভাষায় বকাঝকা করে। তা সহ্য করতে না পেরে তাকে মারধর করেছি। তবে কোনো যৌতুক চাওয়া হয়নি।
নির্যাতিত পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিগত ৮ বছর আগে কালীগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের পুনসই গ্রামের মো. আতিকুল্লাহর ছেলে মো. শহিদুল্লাহর সাথে বক্তারপুর ইউনিয়নের বক্তারপুর গ্রামের আজিজুল হকের মেয়ে মোসাঃ মুন্নি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের দুই বছর অতিবাহিত হলে শ^শুর-শাশুড়ির ইন্দনে স্বামী যৌতুক চেয়ে স্ত্রীর সাথে দুর্ব্যবহার করে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালাতে থাকে। এর মধ্যে তাদের ঘরে মো. মৃদুল ও সিমা নামে দুই ছেলেমেয়ে জম্ম নেয়।
নির্যাতিত স্ত্রী মুন্নি বলেন, বিয়ের পর ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সাংসারিক সুখের জন্য বাপের বাড়ি থেকে নগদ দুই লক্ষ টাকাসহ মূল্যবান মালামাল এনে স্বামীকে দেই। ইদানিং স্বামী ৪ লাখ টাকা বাপের বাড়ি থেকে আনার জন্য চাপ দিতে থাকে। আমার বাবার আর্থিক অবস্থা শোচনীয় স্বামীর দাবিকৃত টাকা আনতে অপরাগত প্রকাশ করি। গত ১৬ জুলাই সকালে স্বামী তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুনরায় যৌতুকের জন্য লাঠি ও লোহার রড দিয়ে পিটাতে থাকেন। গুরুতর আহত অবস্থায় দুইদিন ঘরে আটকিয়ে রাখে স্বামী। গত ১৮ জুলাই সকালে কৌশলে স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে বাপের বাড়ি বক্তারপুর চলে আসলে রাতে কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রো ভর্তি হই।