বোরকা পরে ছাত্রীনিবাসে ঢুকে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
আট বছর আগে বোরকা পরে ছাত্রীনিবাসে ঢুকে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে রংপুরের একটি আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জাবিদ হোসাইন এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খন্দকার রফিক হাছনাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডিতরা হলেন মিঠাপুকুর উপজেলার তাসকির হোসেন (২৮) ও তার বান্ধবী একই উপজেলার গড়েরপাড় এলাকার দুলালী আখতার (২৮)। রায় ঘোষণার সময় তারা উপস্থিত ছিলেন। যাবজ্জীবনের পাশাপাশি আসামিদের ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।
মামলার বিবরণে বলা হয়, রংপুর সরকারী কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী দুলালী আখতার নগরীর খামারপাড়া এলাকায় শাকিব টাওয়ার নামে একটি বেসরকারি ছাত্রীনিবাসে থাকতেন । নিজের ভুয়া জন্মদিন পালনের কথা বলে ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর দুপুরে দুলালী তার এক বান্ধবীকে তার কক্ষে ডেকে আনেন। শীতকালীন ছুটির কারণে ওই সময় ছাত্রীনিবাসে দুলালী ছাড়া আর কেউ ছিল না। কিছুক্ষণ পর সেখানে বোরকা পরে ছাত্রীর ছদ্মবেশে আসেন দুলালীর বন্ধু কারমাইকেল কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্স শ্রেণির ছাত্র তাসকির হোসেন।
দু'জনকে কক্ষে রেখে দুলালী বাইরে বেরিয়ে এসে দরজায় তালা লাগিয়ে দিয়ে পাহারা দেন। এ সুযোগে তাসকির ছাত্রীটির মুখ ওড়না দিয়ে বেঁধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। গোপনে ওই দৃশ্য ভিডিও ধারণ করা হয়। ঘটনাটি কাউকে জানালে ভিডিও চিত্র বাজারে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখান তাসকির।
লোকলজ্জার ভয়ে ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী বিষয়টি কাউকে জানাননি। পরেরদিন তাসকির ফের ধর্ষণের হুমকি দিলে ছাত্রীটি রংপুর কোতোয়ালী থানায় দিয়ে তাসকির ও দুলালীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানার এসআই নজরুল ইসলাম তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ৭ মার্চ তাসকির হোসেন ও দুলালী আখতারের বিরুদ্ধে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দিলে এ মামলার বিচার কাজ শুরু হয়।
ঘটনার পর আসামিরা গ্রেফতার হয়ে বেশ কিছুদিন কারাগারে থেকে জামিনে বেরিয়ে আসেন। গত ৯ জুলাই যুক্তিতর্ক শেষে আদালত আসামিদের পূর্বের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।