ওসি মোয়াজ্জেমকে হত্যা মামলার আসামি করার আবেদন করা হবে’
নুসরাতের পরিবারের দাবি, হত্যাকারীদের প্রশ্রয়দাতা ও নুসরাতের হত্যাকে আত্মহত্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টার মূলহোতা ওসি মোয়াজ্জেম হত্যাকারীদেরই একজন। আর তাই তাকে শুধু আইসিটি আইনের মামলায় নয়, হত্যা মামলার আসামি করতে আদালতে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন এ মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী।
গত ২৭ মার্চ ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। ওসি মোয়াজ্জেম সেই ঘটনায় থানায় ডেকে নিয়ে সেখানে নুসরাতসহ তিন বান্ধবীর বক্তব্য ভিডিও ধারণের মাধ্যমে তাদের চরম নাজেহাল করেন। পরে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরিবারের দাবি, নুসরাত হত্যাকে আত্মহত্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতেই ওসি মোয়াজ্জেম নুসরাতের ধারণকৃত বক্তব্যের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
অন্যদিকে এই হত্যা মামলার প্রধান আসামী অধ্যক্ষ সিরাজও আদালতে দেয়া তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নুসরাতকে হত্যা করে তা আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিল বলে পিবিআই'র তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। আর তাই নুসরাত পরিবারের প্রশ্ন এই হত্যা মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজরা আসামি হলে ওসি মোয়াজ্জেম কেন নয়?
নুসরাতের ভাই বলেন, ওসি মোয়াজ্জেম গ্রেফতারের পর আমাদের বিশ্বাস আরো বেড়ে গিয়েছে, আমরা আমাদের বোনের বিচারটা পাবো।
অন্যদিকে নুসরাত হত্যা মামরার এই আইনজীবী জানান, শুধু আইসিটি আইনের এই মামলায় নয় নুসরাত হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেয়ার অপচেষ্টাকারী হিসেবেও এই ওসিকে হত্যা মামলার আওতায় আনার জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।
নুসরাত হত্যা মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট শাহজাহান সাজু বলেন, হত্যাকাণ্ডের সহযোগী হিসেবে তার বিরুদ্ধে আদালতে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয় সে ব্যাপারে আমরা পদক্ষেপ নিবো।
আগামী ২০ জুন চার্জ গঠনের দিনেই আবেদন করা হবে বলেও জানান এই আইনজীবী। মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাতকে গত ২৭ মার্চ যৌন নিপীড়নের ঘটনায় একই দিন গ্রেফতার হয় অধ্যক্ষ সিরাজ। আর এই ঘটনার জের ধরেই গত ৬ এপ্রিল নুসরাতকে পরিকল্পিতভাবে আগুনে ঝলসে দেয়া হয়।
নুসরাতের শ্লীলতাহানি, হত্যা ও অবৈধভাবে ভিডিও ধারণের ঘটনায় ৩টি মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজ ও ওসি মোয়াজ্জেমসহ মোট অভিযুক্ত ১৭ জন। যাদের সবাই এখন পুলিশের হেফাজতে।
গত ১০ এপ্রিল আগুন সন্ত্রাসের শিকার হয়ে মারা যায় নুসরাত।