পিলখানা হত্যা: রায় নিয়ে বিপাকে রাষ্ট্র-আসামিপক্ষ
পিলখানা হত্যা মামলায় ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার রায় নিয়ে বিপাকে পড়েছে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, রায় পড়ে খালাস পাওয়াদের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে। আসামিপক্ষ বলছে, আইনে বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে আপিল করা কষ্টসাধ্য ও ব্যয়সাপেক্ষ।
এর আগে বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকালে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১৮৫ জনের যাবজ্জীবন ও ২০০ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে হাইকোর্ট। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতেই পিলখানা হত্যা। ষড়যন্ত্র রুখতে প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপের প্রশংসাও করা হয় রায়ে।
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এবং আলোচিত পিলখানা হত্যা মামলায় ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১৮৫ জনের যাবজ্জীবন এবং ২০০ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ঘোষণা করে দুবছর আগে রায় দিয়েছিলেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
বুধবার সকালে ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করলো হাইকোর্ট। বিচারপতিরা বলছেন, এত পৃষ্ঠার রায় দেশে এটাই প্রথম।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান, রায় পড়ে খালাসপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় হয়েছে, তিন বিচারপতি ঐক্যমতেই পৌঁছেছেন সমস্ত ব্যাপারে। কিন্তু ৩ জনেই আলাদা আলাদা রায় দিয়েছেন। মোটমাট ৫৫২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে, তার মধ্যে ১৩৯ জনকে দেয়া হয়েছে মৃত্যুদণ্ড। যারা খালাস পেয়েছেন তাদের ব্যাপারে আপিল করা হবে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতেই পিলখানা হত্যাকাণ্ড। ষড়যন্ত্র রুখতে প্রধামন্ত্রী পদক্ষেপের প্রশংসা করেন আদালত।
ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, রাষ্ট্রনায়কোচিতভাবে তার প্রধানমন্ত্রীর গৃহীত দৃঢ় পদক্ষেপ ছিল সময়োপযোগী। প্রশিক্ষিত, দক্ষ ও সুশৃঙ্খল প্রতিষ্ঠান হিসাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনঅ, বিমানবাহিনী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি মোকাবেলার মাধ্যমে পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে সমগ্র দেশবাসীর ভালবাসা ও সুনাম অর্জন করেছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন,এত পৃষ্ঠার রায় পর্যবেক্ষণ করে একমাসের মধ্যে আপিল করা সম্ভব নয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, আসামিদের পক্ষে আমরা মহামান্য সুপ্রীম কোর্টে বাংলাদেশ সংবিধানের আর্টিকেল ১০৩ অনুযায়ী আপিল অথবা যেখানে প্রযোজ্য লিভ টু আপিল আমরা ফাইল করবো।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তর পিলখানায় নারকীয় হত্যাকান্ডে ৫৭ সেনাকর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন।