পদ্মা পানি বৃদ্ধি অব্যাহত পদ্মার ভাঙনে মসজিদ-বসতভিটা বিলীন, হুমকিতে ফেরিঘাট
পদ্মা পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সোমবার (৩০ আগস্ট) সকাল নয়টা থেকে হঠাৎ ভাঙন শুরু হয়েছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের দৌলতদিয়ার ৪ নম্বর ফেরিঘাট এলাকায়। ইতোমধ্যে ফেরিঘাট সংলগ্ন সিদ্দিক কাজীর পাড়া জামে মসজিদসহ ৫টি বসতবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়াও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে অন্তত ২০ টি বসতবাড়ি। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট, শতশত বসতবাড়িসহ নানা স্থাপনা। মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) সকাল ১০ টার সময় দৌলতদিয়া ৪ নম্বর ফেরিঘাটে দেখা যায়, মুহূর্তেই বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি। একের পর এক বড় মাটির চাপ ভেঙ্গে পড়ছে। এছাড়াও সিদ্দিক কাজীর পাড়া জামে মসজিদের তিন ভাগের দুই ভাগই গিলে খেয়েছে সর্বনাশা পদ্মা। কোনক্রমে অবশিষ্ট অংশটুকু ঝুলে আছে। সেটুকু বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। আর আশেপাশের বাসিন্দারা তাদের শেষ সম্বল সরাতে ব্যস্ততার মধ্যে সময় পার করছে। মুহূর্তেই নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে অন্তত ১০০ মিটার এলাকা। এ সময় দৌলতদিয়া ২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হামজা মোল্লা বলেন, সোমবার ভোর থেকে আস্তে আস্তে ভাঙন শুরু হলেও সকাল নয়টা থেকে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। মুহূর্তেই পাঁচটি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এখনও ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে লঞ্চঘাট এবং ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ফেরিঘাটসহ দুই শতাধিক বাড়ি। দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডল বলেন, ভাঙন এলাকার মানুষের আহাজারি দেখে নিজেকে ধরে রাখাই কষ্ট। আমরাও নিরুপায়। বার বার কর্তৃপক্ষকে বলার পরও কেন জোরাল পদক্ষেপ হচ্ছে না বুঝতে পারছি না। এখন প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ছাড়া আর কাজ হবে না। অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন তিনি। বিআইডব্লিউটিএ আরিচা সেক্টরের উপ সহকারী প্রকৌশলী মো. মকবুল হোসেন বলেন, ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে ৩০ জন শ্রমিক দ্বারা জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে। এছাড়াও এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম, গোয়ালন্দ উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা মুন্সি, গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুল হক খান মামুন, দৌলতদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রহমান মন্ডল প্রমুখ। এ সময় রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, আগামী শুকনো মৌসুমী দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় স্থায়ী কাজ করা হবে যা একনেকে পাশ হয়ে আছে। তারপরও ঘাট এলাকার ভাঙন রোধে বিআইডব্লিউটিএ বালুর বস্তা ফেলার কাজ করছেন। এবং কাজের গতি বাড়াতে বিআইডব্লিউটিএ উপসহকারী প্রকৌশলী মকবুল হোসেনকে নির্দেশ দেন তিনি। জেলা প্রশাসক আরও বলেন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই নৌরুটটি যাতে সচল থাকে, ভাঙনরোধে যাতে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হয় সেজন্য মন্ত্রণালয়ের পত্র প্রেরণ করা হবে। সেইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্তদের শুকনো খাবার ও তালিকা করে টিন প্রদান করা হবে।